পুঁইশাক চাষ
পুঁইশাক (Basella alba) বাংলাদেশের প্রধান গ্রীষ্মকালীন পাতা জাতীয় সবজি, তবে সারা বছর ধরেই পাওয়া যায়। এতে ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। পুঁইশাক সাধারণত বসতবাড়ির আঙিনার বেড়ায় বা মাচায় জন্মাতে দেখা যায়। এছাড়া ব্যবসায়িক ভিত্তিতে চাষ করা হয়।
জাত : পুঁইশাকের দুইটি জতের চাষ হয়ে থাকে। যথা।
ক) লাল পুঁইশাক : পাতা ও কাণ্ড লালচে।
খ) সবুজ পুঁইশাক : পাতা ও কাণ্ড সবুজ।
এছাড়াও বাংলাদেশে কৃষি গবেষণা কর্তৃক উদ্ভাবিত ২টি জাতে আছে। যেমন বারি-১, বারি-২।
জমি তৈরি
সাধারণত মার্চ-এপ্রিল বা চৈত্র মাস পুঁইশাক লাগানোর ভালো সময় তবে সেচের সুবিধা থাকলে ফাল্গুন মাস হতেই এর চাষ করা যেতে পারে। চারা রোপণের পূর্বে জমি ভালোভাবে চাষ ও মই দিয়ে ঝুরঝুরা করে তৈরি করে নিতে হবে। এ সবজি চাষের জন্য উর্বর বেলে-দোআঁশ ও দোআঁশ মাটি উত্তম।
সার প্রয়োগ
পুঁইশাক চাষে গোবর বা কমপোস্ট সার ব্যবহার করা ভালো। এতে মাটির গুণাগুণ বজায় থাকবে ও পরিবেশ রক্ষা হবে। পুঁইশাকের জন্য প্রতি শতকে বা ৪০ বর্গমিটার জমিতে নিম্নরূপ সার ব্যবহার করতে হবে।
সারের নাম | শতক প্রতি |
---|---|
গোবর | ৪০ কেজি |
ইউরিয়া | ১ কেজি |
টিএসপি | ৫০০ গ্রাম |
এমপি | ৫০০ গ্রাম |
সার প্রয়োগের নিয়মাবলি
ক) ইউরিয়া ছাড়া সব সার জমির শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হয়। তবে গোবর জমি তৈরির প্রথম দিকে প্রয়োগ করাই উত্তম।
খ) ইউরিয়া সার চারা গজানোর ৮-১০ দিন পর থেকে ১০-১২ দিন পরপর ২-৩ কিস্তিতে উপরি প্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।
বীজ বপন ও চারা রোপণ
মার্চ-এপ্রিল মাসে পুঁইশাকের বীজ বপন করতে হয়। বীজ ও শাখা কলম দিযে পুঁইয়ের চাষ করা যায়। তবে বীজ দিযে চারা তৈরি করে এবং তা রোপণ করে চাষ করাই ভালো। পুঁইশাকের চারা ৬০-৮০ সেমি. দূরে দূরে সারি করে ও সারিতে ৫০ সেমি দূরে দূরে রোপণ করতে হবে। বর্ষার সময় পুঁইশাকের লতার কিছু অংশ কেটে মাটিতে রোপণ করা যায়।
পরিচর্যা
নিড়ানি দিয়ে জমি আগাছামুক্ত রাখতে হবে। খরার সময় নিয়মিত পানি সেচ দিতে হবে। সেচের পর নিড়ানি দিয়ে মাটি ঝুরঝুরা করে দিতে হবে। জমিতে যাতে পানি না জমে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
পোকামাকড়
এ শাকের ক্ষতিকর পোকার মধ্যে শুঁয়োপোকা উল্লেখযোগ্য। এ পোকা গাছের পাতা, কচি ডগা খেয়ে ক্ষতি করে থাকে।
ফসল সংগ্রহ ও ফলন
পুঁইশাকের ডগা লম্বা হতে শুরু কলেই ডগা কেটে সংগ্রহ করতে হবে। এভাবে ডগা কেটে সংগ্রহ করলে নতুন ডগা গজাবে। নতুন ডগা কয়েকবার কেটে ফসল সংগ্রহ করা যায়। ভালোভাবে চাষ করলে প্রতি শতকে ১৩০-১৫০ কেজি পুঁইশাকের ফলন পাওয়া যায়।
এগ্রোবাংলা ডটকম
সুলভে কৃষি পন্য ক্রয়ে আস্থা রাখুন বাংলাদেশের প্রথম কৃষি ভিত্তিক ইকমার্স ‘এগ্রোবাংলা শপ’ এ।