সফটওয়্যার বলে দিবে সারের পরিমাণ
বাগেরহাট জেলার শরণখোলার ধানসাগর ইউনিয়নের কৃষক আবদুল মজিদ মিয়া। দিন দিন তাঁর জমিতে ধান উৎপাদনের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। চিন্তায় তাঁর রাতের ঘুম হারাম। জমিতে অনেক বেশি সার দেওয়ার পরও উৎপাদন বাড়ছে না। শুধু বাগেরহাটের মজিদ মিয়াই নয়, বাংলাদেশের বেশির ভাগ কৃষকের মনে একটি ধারণা তৈরি হয়েছে, বেশি সার জমিতে দিলে ফসলের উৎপাদন বেড়ে যাবে। তাই কৃষকেরা জমিতে ফসলের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য বেশি পরিমাণে সার দিয়ে থাকেন। তার পরও অনেকের জমিতে ফসল উৎপাদনের হার বৃদ্ধি পায় না। বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে ফসলি জমিতে পরিমাণমতো সার দিতে হবে।
শুধু বেশি সার দিলেই হবে না। জমির পরিমাণ, ফসলের ধরন, জমির শ্রেণী-সর্বোপরি জমিতে কৃষক কোন ফসল চাষ করবে, এর ওপর জমিতে সার দেওয়া নির্ভর করে। এ ছাড়া বাংলাদেশের একেক অঞ্চলের জমির ধরন একেক রকম। ওই অঞ্চলের জমির ধরন বুঝে সার দিলেই কৃষক চাহিদামতো ফসল উৎপাদন করতে পারবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নির্দিষ্ট পরিমাণ জমিতে ফসল উৎপাদনের জন্য কতটুকু সার দিতে হবে, তা নিয়ে একটি সফটওয়্যার তৈরি করেছে ই-জেনারেশন। www.frs-bd.com ঠিকানার ‘ডিজিটাল সার সুপারিশ সফটওয়্যার’ নামের একটি ওয়েবসাইটে সারের তথ্য জানা যাবে।এই ওয়েবসাইটের প্রথম পৃষ্ঠায় দুটি অপশন পাবেন। প্রথম অংশ srdi লিখে, দ্বিতীয় অপশনে পাসওয়ার্ড (srdi) দিয়ে সাইটে ঢোকা যাবে।এরপর দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় বিস্তারিত তথ্য দেওয়া থাকবে, সেটা পূরণ করলেই আপনার জমির প্রয়োজনীয় সারের পরিমাণ জানতে পারবেন।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট ওয়েবভিত্তিক এ সফটওয়্যার পরিচালনা করছে। এ ছাড়া গ্রামীণফোনের সামাজিক তথ্যকেন্দ্র (জিপিসিআইসি) থেকে সারবিষয়ক পরামর্শ কৃষকেরা জানতে পারবেন।
ই-জেনারেশনের প্রধান নির্বাহী শামীম আহসান বলেন, কৃষিবিষয়ক বিভিন্ন ধরনের সমস্যার জন্য সাধারণ কৃষকদের পোহাতে হয় নানা দুর্ভোগ। একজন কৃষকের পক্ষে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ ও খবর নিয়েও দরকারি তথ্য পাওয়া কঠিন। তথ্যপ্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে অনেক আগে থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কৃষকেরা উপকৃত হচ্ছেন। আমাদের দেশে বর্তমানে সে জায়গাটি গড়ে উঠেছে ধীরে ধীরে। তথ্যপ্রযুক্তির সেবা কাজে লাগিয়ে কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব।এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে কৃষক তাদের জমিতে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করার সুপারিশ পাবেন।
এসআরডিআই গবেষণায় দেখা গেছে, এ পদ্ধতিতে সার ব্যবহার করে ধানের উৎপাদন ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বেড়েছে। অন্যান্য ফসলের উৎপাদন শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগ বাড়ানো যাবে বলে শামীম জানান।এ প্রকল্পে সহায়তা করছে ক্যাটালিস্ট।
ডিজিটাল সার সুপারিশ সফটওয়্যারের প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. আকছাদুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে দেশের ৩০টি উপজেলায় প্রাথমিকভাবে এই সফটওয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে। চলতি মাসের মধ্যে আরও ৭০টি উপজেলায় এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে কাজ শুরু হবে। এই প্রকল্পে কৃষকদের কাছ থেকে আমরা অনেক ভালো সাড়া পেয়েছি।’
এগ্রোবাংলা ডটকম
সুলভে কৃষি পন্য ক্রয়ে আস্থা রাখুন বাংলাদেশের প্রথম কৃষি ভিত্তিক ইকমার্স ‘এগ্রোবাংলা শপ’ এ।