কাসাভা

বিস্ময়ের নাম কাসাভা আর আবর্জনাও ফেলনা নয়

বিস্ময়ের নাম কাসাভা
কাসাভা (Cassava) থেকে ওরস্যালাইন ও আটা তৈরি এবং বাজারজাতকরণের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা জমা দিয়ে এইচএসবিসি তরুণ উদ্যোক্তা পুরস্কারের রৌপ্য পুরস্কার জিতে নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর সিএমপিআই দল। এ দলের সদস্য হিশাম হায়দার দেওয়ান ও রাশেদ আল আহমেদ তারিক। কাসাভা হলো বাংলাদেশের মিষ্টি আলুর মতো একটি শস্য, যা প্রধানত আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকায় চাষ করা হয়। প্রকৃতপক্ষে কাসাভা পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম শর্করার উৎস। বাংলাদেশে ২০০৬ সাল থেকে কাসাভা চাষ শুরু হয়েছে এবং প্রতি একরে প্রায় ১০ টন শস্য পাওয়া যাচ্ছে। কাসাভা চাষের জন্য স্বল্প সার ও পানির প্রয়োজন হয়।

হিশাম হায়দার দেওয়ান জানালেন, দেশের উত্তরাঞ্চলের দুই হাজার দরিদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে চুক্তির আওতায় আনা হবে। প্রয়োজন হবে ৪০০ একরের মতো জমি। কারখানায় প্রয়োজন হবে ৩৫ জনের মতো কর্মচারী। বাজারে বর্তমানে প্রচলিত গ্লুকোজ ও চালভিত্তিক স্যালাইনের চেয়ে কম দামি ও সমগুণসম্পন্ন পানীয় স্যালাইন তৈরি করা হবে, যা ডায়রিয়া ও অন্যান্য পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধক। তেমনিভাবে বাজারে বর্তমান গমের আটার বিকল্প কাসাভা আটা ছাড়া হবে।এটি যেমন সস্তা, তেমনি উচ্চ পুষ্টিগুণসম্পন্ন।

প্রস্তুতপ্রণালী সম্পর্কে রাশেদ আল আহমেদ তারিক জানালেন, কাসাভা প্রথমে ধোয়া, গুড়া ও ভর্তা করা হবে। এরপর ওপরের পানি থিতিয়ে এল কাসাভা শুকানো ও গুঁড়া করা হয়। শেষ ধাপ হচ্ছে মোড়কজাত করা। কাসাভা স্যালাইনের মূল কাঁচামাল কাসাভা আটা। এর সঙ্গে লবণ মিশিয়ে বাজারে ছাড়া হবে।

দলটির সদস্যরা তাঁদের ব্যবসায়িক পরিকল্পনায় জানান, কাসাভা স্যালাইন হাসপাতাল, ফার্মেসি ও মুদির দোকানের মাধ্যমে সারা দেশে বিক্রি করা হবে। প্রতি ৫০ গ্রাম প্যাকেটের দাম হবে আট টাকা, সমপরিমাণ রাইস স্যালাইনের দাম ১২ টাকা। বিভিন্ন বিপণন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাসাভা আটা সারা দেশে বিপণন করা হবে। কাসাভা আটা প্রতি কেজি ২০ টাকা দরে বিক্রি করা হবে।

আবর্জনাও ফেলনা নয়
আবর্জনা থেকে জৈব তেল উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণ বিষয়ে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা জমা দিয়ে এইচএসবিসি তরুণ উদ্যোক্তা পুরস্কারের ব্রোঞ্জ পুরস্কার জিতে নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের দল স্পার্টান্স- বাংলাদেশ। এর সদস্য তিনজন হলেন এ কে এম তানভীর হোসাইন (দলনেতা), অভিজিৎ বড়ুয়া ও সোহেল রানা।

বিশ্বব্যাপী প্রধান সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং জ্বালানিসংকট। এ সমস্যাগুলো সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে জৈব তেলের ব্যবহার। তাই পরিকল্পনা ছিল মাতুয়াইল ল্যান্ডফিল থেকে দৈনিক ১৬ টন আবর্জনা সংগ্রহ করা এবং সেগুলো ‘পাইরোলাইসিস’ পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াজাত করে দৈনিক এক হাজার ৪৮০ লিটার গ্রিন পেট্রল বা জৈব তেল উৎপাদন ও তা বাজারজাত করা−নিজেদের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা সম্পর্কে বলছিলেন দলনেতা এ কে এম তানভীর হোসাইন।

দলটির সদস্যরা জানান, এই প্রকল্পের ফলে বর্জয ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করা যাবে। প্রচলিত পেট্রল এবং অকটেনের চেয়ে কম দামে জৈব তেল বাজারে ছেড়ে জৈব জ্বালানি তেল ব্যবহারে মানুষকে উৎসাহিত করা হবে। এ ছাড়াও পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ আমদানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচানো সম্ভব হবে।পাশাপাশিপরিবেশ দূষণও কমানো যবে।অভিজিৎ বড়ুয়া বলেন, প্রাথমিকভাবে প্রায় ছয় কোটি ৭০ লাখ টাকার বিনিয়োগ প্রয়োজন এই প্রকল্পে।
বাজারে পরিবেশবান্ধব সিএনজির মূল্য তুলনামূলকভাবে কম, এটি প্রকল্পের ক্ষেত্রে হুমকি কি না জানতে চাইলে সোহেল রানা বলেন, ‘ইঞ্জিনের দক্ষতা নিশ্চিত করতে সিএনজির পাশাপাশি পেট্রল বা অকটেনের বাধ্যতামূলক ব্যবহার ও বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় সিএনজি স্টেশন না থাকায় এটিকে আমরা হুমকি হিসেবে দেখছি না।’

এর সঙ্গে যোগ করলেন এ কে এম তানভীর হোসাইন। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে পেট্রলের মূল্য ৭৩ টাকা লিটার এবং অকটেন ৭৫ টাকা লিটার, সেখানে গ্রিন পেট্রল ৬২ টাকা লিটার মূল্যে আমরা ঢাকা ছাড়াও মুন্সিগঞ্জ, রাজবাড়ী ও ফরিদপুরে বাজারজাত করার পরিকল্পনা করেছি। কারণ এই তিনটি জেলায় কোনো সিএনজি স্টেশন নেই।’
এগ্রোবাংলা ডটকম
সুলভে কৃষি পন্য ক্রয়ে আস্থা রাখুন বাংলাদেশের প্রথম কৃষি ভিত্তিক ইকমার্স ‘এগ্রোবাংলা শপ’ এ।