মলা মাছের সাথে তেলাপিয়া চাষ
শিরোনামটা হতে পারতো তেলাপিয়ার সাথে মলা মাছের চাষ। তা না হয়ে দিলাম মলা মাছের সাথে তেলাপিয়া চাষ। এই শিরোনাম দিলাম এই কারনে যে,
(১) পুকুরে প্রথমে মলা মাছ ছাড়তে হবে তার পর এর উপর তেলাপিয়া ছাড়তে হবে।
(২) মলা মাছের বাজারজাত হবে আগে।
(৩) মলা মাছে লাভের পরিমানটাও অনেক বেশী হবে।
(৪) মলা মাছের চাষের সময়কাল কম। তাই শিরোনামটা দিলাম মলার সাথে তেলাপিয়ার চাষ।
মলা তেলাপিয়া চাষ পদ্ধতি
প্রথমে পুকুরে বিষটোপ দিয়ে অবাঞ্ছিত মাছ দুর করে তার পরের দিন পুকুরের তলদেশের অবস্থা বুঝে শতাংশ প্রতি আধা কেজি থেকে এক কেজি চুন দিয়ে এর ৬-৭ দিন পর শতাংশ প্রতি (.৩) মিলি পিপিএম হারে সুমিথিয়ন দিয়ে তার একদিন পর পুকুরে মলা মাছের রেনু দিতে হবে। আমাদের বর্তমান চাষ পদ্ধতি অনুযায়ী প্রতি ৫০ শতাংশের পুকুরে এক হাপা মলা মাছের রেনু দিতে হবে। রেনু ছাড়ার পর থেকে ডিম সিদ্ধ করে ২ দিন খাওয়ানোর পর ৩য় দিন থেকে নার্সারী পাউডার ৪ ঘন্টা আগে থেকে ভিজিয়ে দিনে দুইবার ( সকাল দশটায় একবার বিকেল পাঁচ টায়) দিতে হবে। খাবার দেয়ার পদ্ধতি ‘পুকুরে মলা মাছের চাষ’ পোস্টে বিস্তারিত দেয়া আছে। এভাবে ২৫-৩০ দিন রেনুকে খাওয়ালে পরে ১-১.৫ ইঞ্চি সাইজে পরিণত হবে। তারপর এই মলা মাছের উপর তেলাপিয়ার মনোসেক্স পোনা ছাড়তে হবে।
মলা মাছের বয়স যখন ৯০ দিন পুর্ন হবে সেদিন মলা মাছ বাজার জাত করার পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে। তেলাপিয়ার বাজারজাত হবে আরও পরে। ঠিকভাবে পারিপালিত হলে ৯০ দিন পর মলা মাছ ২০০-৩০০ পিসে কেজি হবে।
এভাবে মলা মাছের বয়স ৯০ দিন হলে পরে আনুমানিক ৯০% মলা বিক্রি করে দিয়ে ১০% মলা মাছ তেলাপিয়ার সাথে রেখে দিতে হবে। তারপর তেলাপিয়াকে সাইজ হওয়ার আগ পর্যন্ত চাষে রেখে দিতে হবে ৫০ কেজি উৎপাদন হওয়ার আগ পর্যন্ত। কারন শতাংশ প্রতি তেলাপিয়া ৫০ কেজি উৎপাদন হয়ে গেলে আর বেশী একটা উৎপাদন হয় না সাধারণ পদ্ধতিতে। যে ১০% মলা মাছ এর সাথে থেকে যাবে তা থেকেও পেতে পারেন প্রথম বারের বিক্রির সমান যদি আল্লাহ সহায় হউন।
সংক্ষেপে আরও একটা কথা বলে রাখি মলা কিন্তু পুকুরের প্রাকৃতিক প্রোবায়োটিক!!!
লেখক: এ. কে. এম. নূরুল হক,
স্বত্বাধীকারী-ব্রহ্মপুত্র ফিস সীড কমপ্লেক্স (হ্যাচারি), শম্ভুগঞ্জ, ময়মনসিংহ
এগ্রোবাংলা ডটকম
সুলভে কৃষি পন্য ক্রয়ে আস্থা রাখুন বাংলাদেশের প্রথম কৃষি ভিত্তিক ইকমার্স ‘এগ্রোবাংলা শপ’ এ।