নদীর উপর ভাসমান খাচায় মৎস্য চাষ
জালের খাঁচায় মাছের চাষ খাঁচায় মুরগী পালন বিষয়টির সাথে ইতোমধ্যে আমরা বেশ পরিচিত হয়েছি এবং এই পালন ব্যবস্থাটির প্রসারও ঘটেছে। ছিক এ মুহূর্তে যদি আপনাকে বলা হয় ‘জালের খাঁচায় মাছের চাষ’ করবেন ? হবে হঠাৎ করে আপনিও সেই সময়কার মতো একটু অবাক হবেন, যেমন খাঁচার মুরগী পালনের জন্য ব্যবস্থাটি কী ত্বরিৎ গতিতে প্রসারিত হয়েছে কত মানুষ আজ এ পেশায় কর্মের সংস্থান করে নিয়েছেন। জালের খাঁচায় মাছের চাষ ব্যবস্থাটিও একদিন এমনি জনপ্রিয় হবে, হাজারও মানুষের কর্মের সংস্থান হবে এ খাতে, আমিষের উৎপাদন বাড়বে, শক্ত হবে জাতীয় অর্থনীতি।
যাদের পুকুর নেই মাছ চাষ আজ আর তাদের জন্য সমস্যাই নয়। জালের খাঁচায় মাছ চাষের আদর্শ ক্ষেত্রই হচ্ছে নদী-নালা, খাল-বিলসহ উন্মুক্ত জলাশয়। যেখানে প্রবল স্রোত নেই অথচ আছে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ। মাছ চাষের জন্য উত্তম জায়গা হচ্ছে এমন উৎসগুলো। মশারির মোত বিশাল আকারের জাল প্রবহমান পানিতে ডুবিয়ে চারকোণা বেধেঁ তাতে ২”- ৩” সাইজের পোনা ছেড়ে মাস চারেক লালন-পালন কলে পুকুরে যে উৎপাদন পাবেন তার অন্তত কৃড়িগুণ বেশি পাবেন এখানে। স্বভাবতই প্রশ্ন আসতে পারে, বেশি উৎপাদনের কারণ কি? উত্তর হচ্ছে: পুকুরের পানি বদ্ধ আর এখানকার পানিতে সব সময়ই স্বাভাবিক প্রবাহ আছে। তাই এখানকার পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ পুকুরের চাইতে অনেক বেশি যা মাছের বৃদ্ধির জন্য সহায়ক। পুকুরে মাছকে সরবরাহকৃত খাবারের উচিছষ্ট এবং মাছের মল জমে পানি কিছুটা হলেও দূষিত করে, এখানে সে সুযোগ নেই। সরবরাহকৃত খাবারের উচ্ছিষ্ট এবং মাছের আবর্জনা জালের সরু ফাঁক দিয়ে প্রবাহিত পানিতে চুয়ে যায় যার ফলে পানি সব সময়ই বিশুদ্ধ থাকছে। পুকুর বদ্ধ হওয়ার জৈব খাবারের পরিমাণ কম। এখানে জৈব খাবার উৎপাদনের সুযোগ অনেক বেশি যা মাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য সহায়ক। এরকম অনেক উদাহরণ দাঁড়করানো যাবে জালের খাঁচায় মাছের চাষকে জনপ্রিয় করার জন।
আমাদের জানা মতে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম মাছ চাষের নতুন এই ব্যবস্থাটির প্রবর্তন করেন গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ থানার উলুখেলিক গ্রামের হাবিবুর রহমান। তিনি স্থানীয় বালু নদীতে বহুদিন বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করে সফল হয়েছেন এবং এখন তিনি বাণিজ্যিকভাবে এই পদ্ধতিতে মাছের চাষ করছেন। জালের খাঁচায় মাছের চাষে হাবিবুর রহমান সাহেবের প্রাপ্ত ফল থেকেই কারিগরী এই তথ্যগুলো উপস্থাপিত হল: বাংলাদেশে প্রকৃতিগত কারণেই আমার বিশ্বাস, জালের খাঁচায় মাছের চাষ ব্যবস্থাটি জনপ্রিয় হবে। কারণ বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশের অর্ধেক পানির নিচে থাকে। এই ৪/৫ মাস সময়ে নদী-নালা, খাল-বিলই হওয়া উচিত মাছ চাষের মোক্ষম স্থান।
খাঁচায় মাছ চাষের সুবিধা দেশের ব্রহ্মপুত্র, পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, হালদা, সুরমাসহ অধিকাংশ নদ-নদীর বাঁকে এ ধরনের মৎস্য চাষ সম্ভব। তবে এ ক্ষেত্রে পানি দূষণমুক্ত, খরস্রোতমুক্ত এবং শত্রুমুক্ত হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, নদীতে খাঁচায় মাছ চাষ করলে সহজেই প্রবহমান নদীর পানি পাওয়ার পাশাপাশি প্রাকৃতিক উৎস্য থেকেও অনেকটা খাবার পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে পুকুর খনন ও তৈরির অতিরিক্ত খরচ কমে যায়। যেকোনো সময়ই খাঁচার সংখ্যা বৃদ্ধি করে খামার সম্প্রসারণ সম্ভব। নদীর প্রবহমান পানিতে প্রচুর অক্সিজেন থাকায় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া খাঁচার মাছের বর্জ্য পানির স্রোতে অন্যত্র চলে যায়, ফলে পানি দূষিত হয় না। যদিও খাঁচা তৈরিতে কিছু খরচ হয়, তথাপি ভূমির মালিকানা সমস্যা, ভূমি ক্রয় এবং ভূমির ব্যবহার থেকে রেহাই পাওয়া যায়। ফলে ওই জমি কৃষিকাজে ব্যবহার করা সম্ভব।
খাঁচা কোথায় বসাতে হবে খাঁচা যে কোনো মাপের হতে পারে। ১ বর্গ মি. (২ হাত- ২হাত প্রায়) বা ৫ বর্গ মি. ১০,৫০ বা ১০০.৫০ বর্গ মি. মাপের। এই খাঁচা বড় পুকুরেও বসাতে পারেন। তবে সেখানে সমস্ত পুকুরের আয়তনের মাত্র ৫ ভাগ অথবা ১০ ভাগ ব্যবহারকরতে পারবেন ভালো উৎপাদন যেমন প্রতি ঘনমিটারে (২ হাত- ২হাত – ২হাত প্রায়) ১০ কেজি থেকে ১৫ কেজি। আপনি পেতে পারেন ৪/৫ মাসে । সেখানে খাঁচা বসাতে হবে চলমান খোরা পানিতে। যেমন বর্ষা মৌসুমে যে সমস্ত এলাকা ডুবে যায়, সেখানে অথবা নদীর বাঁকে যেখানে স্রোত থাকে খুব কম। খাঁচা বসাতে পানির গভীরতা থাকতে হবে সর্বনিম্ন ১.২ মি. বা ৪৬ ইঞ্চি তবে সর্বস্ব পানির উচ্চতায় কোনো হিসাব নেই। পানি যতই বৃদ্ধি পাক খাঁচার কোনো অসুবিধা নেই। খাঁচা বসাতে খাঁচার মাপে উপরে একটা বাঁশের ফ্রেম তৈরি করতে হবে এবং চার কোণায় বাঁশ পুঁতে শক্ত করে বেঁধে দিতে হবে। পানি বাড়লে খাঁচা তুলে উপরে করে দেবেন, পানি কমলে খাঁচা নিচু করে দেবেন। খাঁচার ওপর খোলা এবং ৫ দিকে জাল এবং পানির উপরে ১ ফুট উঁচু রাখতে হবে।
এই খাঁচা কিসের তৈরিতিন বা চার ইঞ্চি থেকে এক ইঞ্চি ফাঁস আকারের মূল পলিথিলিন জাল বা এইচডিপি জাল, খাদ্য আটকানোর বেড় তৈরির জন্য পলিয়েস্টার কাপড়, নাইলনের দড়ি, এক ইঞ্চি জিআই পাইপ, ভাসমান খাঁচার জন্য পিভিসি ব্যারেল বা ড্রাম, খাঁচা স্থির রাখার জন্য অ্যাঙ্কর ও বাঁশ। এই জালের খাঁচা এক বিশেষ ধরনের পলিথিন জাতীয় সুতা থেকে তৈরি। এই জাল সাধাণত গিরাবিহীন মেশিনে তৈরি করা হয়। আবার আপনি চাইলে গিড়া দিয়ে হাতেও তৈরি করে নিতে পারেন। বর্তমানে বিদেশ থেকে আমদানি করা ঐ জাল বাজারেও পাওয়া যায়। এই পলিথিন সুতার জালের সুবিধা হল, এই জাল কাঁকরায় কাটতে পারে না, পানিতে পচে না। বছরে দুটি ফসল তোলা কোনো সমস্যা নয়। বর্ষা মৌসুমে বিলে আবার শীত মৌসুমে খালে।
খাঁচা তৈরি প্রথমেই জিআই পাইপ দ্বারা সাধারণত (দৈর্ঘ্য ২০ ফুট × প্রস্থ ১০ ফুট × উচ্চতা ৬ ফুট) বা (দৈর্ঘ্য ১২ ফুট × প্রস্থ ১০ ফুট × উচ্চতা ৬ ফুট) সাইজের আয়তকারের ফ্রেম তৈরি করতে হবে। ওই ফ্রেমের প্রতিটি কোণে ১০ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট একটি করে জিআই পাইপ ঝালাই করে বসিয়ে দিতে হবে। এরপর ফ্রেমের চারপাশে জাল বেঁধে দিতে হবে। প্রতি দুই ফ্রেমের মধ্যে তিনটি করে প্লাস্টিকের ড্রাম স্থাপন করে পানিতে সারিবদ্ধভাবে ফ্রেমগুলো স্থাপন করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক নোঙর দিয়ে খাঁচাটি পানির নির্দিষ্ট স্থানে বসাতে হবে। এ ক্ষেত্রে জিআই পাইপের স্থলে বাঁশও ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে স্থায়িত্বকাল কম হয়।
খাঁচার কী কী মাছের চাষ করা যায়
খাঁচায় কিন্তু সব ধরনের মাছের চাষ করা যায় না বা ভালো উৎপাদন পাওয়া যায় না। হাবিব সাহেব ১৯৮৯ সালে প্রথম ১৮ প্রজাতির মাছ নিয়ে গবেষণা করেন এবং ভালো উৎপাদন হয়।
১. বিদেশী ঘাওর
২. নাইলোটিকা
৩. রাজপুঁটি
৪. কার্প প্রজাতি
৫. পাঙ্গাশ।
এই সমস্ত মাছের গড় উৎপাদন ৪/৫ মাসে প্রতি ঘনমিটার ৫/১৫ কেজি।
কী মাপের পোনা ছাড়তে হবে পোনা সব সময়ই বড় সাইজের ছাড়া ভালো। এতে সুবিধা হল চাষকালীন সময় কম লাগবে, আবার মুতু্যর হারও কম হবে। পোনা যত বড় সাইজের পাওয়া যায় তত আপনার জন্য লাভজনক। তবে ২ থেকে ৩ ইঞ্চি এর কম হলে চলবে না। কারণ জালের ওপর নির্ভর করে পোনা ছাড়তে হবে।
প্রতি ঘনমিটারে কত পোনা ছাড়বেন এর কোনো সুনিদির্ষ্ট নিয়ম নেই। আসল কথা হল আমি কী মাছ ছাড়ব, কত বড় করে কতদিনে বাজরে বিক্রি করব, যেমন ধরুন- নাইলোটিকা মাছের চাষ করব। বাজারে বিক্রিযোগ্য সাইজ ১০০ গ্রাম। আমি উৎপাদন করব প্রতি ঘনমিটারে ১০ কেজি। সেখানে পোনা ছাড়ব প্রতি ঘনমিটারে ১০০টা + ৫% mortality বা ধরে নিব মারা যাবে। তেমনিভাবে যদি আফ্রিকান মাগুর ছাড়তে চাই এবং লক্ষ্যমাত্রা প্রতি ঘন মি. ১৫ কেজি এবং প্রতিটা মাছের গড় ওজন ২৫০ গ্রাম। তবে সেখানে পোনাছাড়তে হবে। ৬০টা + ৫%।
খাঁচায় মাছের কী কী খাদ্য দিতে হবে প্রাণী মাত্রই খাদ্য দরকার। খাদ্য ছাড়া কোনো প্রাণী বাঁচে না। খাঁচায় অধিক ঘনত্বে মাছ থাকে বিধায় তা প্রয়োজনের সবটুকু খাদ্য আপনাকে বাইরে থেকে দিতে হবে। যদিও চলমান বা খোলা পানিতে কিছু উদ্ভিদ ও প্রাণীকণা সব সময়ই আসে। তবে তা যথেষ্ট নয়। অনেক অনেক বিল বা খাল এলাকায় কোনো মৌসুমে প্রচুর উদ্ভিদ কণার জন্ম হয় যে অল্প ঘনত্বে মাছ ছেড়ে বিনা খাদ্যেই প্রতি ঘন মি. ৪/৫ মাসে ৫/৭ কেজি মাছ উৎপাদন করা যায়। তবে সুষম খাদ্য হিসাবে মাছকে দৈনিক ২/৩ বার খাবার দিতে হবে। এখানে থাকবে প্রাণিজ আমিষ, যেমন- শুটকি মাছ শামুকের মাংস অথবা গরু-ছাগলের রক্ত অথবা মাংসের ছাটি অথবা গরু-ছাগলের নাড়ি-ভুঁড়ি ইত্যাদি। দ্বিতীয়ত খৈল। যে কোনো খৈল, সরিষা, তিল নারকেল বাদাম সয়াবিন, তিসি, তুলা ইত্যাদি। উচ্ছিষ্ট ভাত। এছাড়া প্রচুর ঘাস খায় নাইলোটিকা, গ্রাস কার্প ও রাজপুঁটি। বর্ষাকালে আমাদের দেশের নিম্ন বিলাঞ্চল ভারে থাকে নানা ধরনের ঘাস। এ সমস্ত ঘাসের মধ্যে নরম ঘাস, যেমন- রাইদা, ইছাদল, পোটকা প্রভৃতি। সুষম খাদ্য তৈরি করতে দিতে হবে শটকি অথবা যে কোনা প্রাণিজ আমিষ ১০-৩০%, খৈল ২০-৪০%, গমের ভুষি/মিহি কুঁড়া ২০-৫০% তার সাথে ৫% চিটাগুড় ও ৫-১০% সস্তা দামের আটা ও ০.৫% ভিটামিন। খাবার তৈরি করারসময় একটুকু পানি মিশাবেন যেন খাবারটা মাখতে মাখতে সাবানের মতো শক্ত বলে পরিণত হয়। মাছ সেই বল থেকে কামড় দিয়ে খাবার নেবে। যদি খাদ্য ও পানি ভালোভাবে মিশে শক্ত বলে পরিণত না হয় তবে খাদ্য পানিতে গুলে যাবে। মনে রাখতে হবে তৈরি বল ১৫-২০% মিটার পর্যন্ত পানিতে যেন না গলে। এভাবে খাদ্য তৈরি করে বাঁশের ঝুড়িতে করে খাঁচার মধ্যে পানির ১ হাত নিচে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। মাছ ৫-১০ মিনিটের মধ্যে সমস্ত খাদ্য শেষ করে ফেলবে।
দৈনিক কী পরিমাণ খাদ্য দিতে হবে মাছ তার দৈহিক ওজনের গড়ে ৩-৫% খাদ্য খায়। তবে ১ গ্রাম থেকে ২০ গ্রাম পর্যন্ত পৌছতে ১০-২০% পর্যন্ত খাদ্য খায় এবং এই সময় তবে বাড়তিও বেশি হয়। গড়ে সুষম খাদ্য দিয়ে ১ কেজি মাছ উৎপাদন করতে ২/৩ কেজি খাদ্য দরকার হয়। হবে খাবারের সাথে সাথে কাঁচা গোবর, মুরগীর বিষ্ঠা ও প্রচুর ঘাস দিলে খাদ্য খরচ অনেক কমে যায়।
উৎপাদন কেবল খাঁচায় চাষ করলে অল্প মূলধনে, অল্প সময়, অল্প খরচে অধিক উৎপাদন সম্ভব হয়। উন্নত বিশ্বে বিজ্ঞানীরা আজ প্রতি বর্গমিটা প্রতি মাসে ১০ কেজি মাছ উৎপাদন এ হিসাবে দাঁড়ায় প্রতি বিঘায় মাসে ১০ মেট্রিক টন বা ১০ হাজার কেজি। এর মদ্যে স্থায়ী খরচ ৬ হাজার ৫শ’ টাকা বাদ দিলে মোট মুনাফা ১৯ হাজার ৬শ’ ৫০ টাকা প্রতি খাঁচায় প্রতি ৩/৪ মাসে।
খাঁচায় মাছ চাষ করতে রাত-দিন সব সময় দারোয়ান অবশ্যই থাকতে হবে। কেননা অল্প জায়গায় এত অধিক মাছ থাকায় চুরির সম্ভাবনা বেশি। বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে এই চাষ বাংলাদেশে অধিক লাভজনক। যেহেতু এই চাষ ব্যবস্থটি আমাদের দেশে এখনো প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি। তাই এই তথ্যগুলোর জনাব হাফিজুর রহমানের গবেষণা থেকে নয়।
খাঁচা তৈরির সম্ভাব্য খরচ ও মাছের উৎপাদন ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি খাঁচা তৈরিতে খরচ হয় প্রায় ১৬ হাজার টাকা, যা চার-পাঁচ বছর স্থায়ী হয়। মাছের আকার ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম হলেই বিক্রির উপযোগী হয়, আর এ ক্ষেত্রে সময় লাগে মাত্র ছয় মাস। এ ক্ষেত্রে প্রতি ঘনমিটারে কমপক্ষে ৩০ কেজি মাছ উৎপাদিত হয়ে থাকে। সাধারণত চাষকৃত পোনার ওজন ১০ গ্রাম হয়ে থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে আকারে বড় অর্থাৎ ২০ থেকে ৩০ গ্রাম ওজনের পোনা চাষ করলে সর্বোচ্চ উৎপাদন পাওয়া যায়। খাঁচা তৈরি, পোনার মূল্য, খাদ্য, শ্রমিক ও অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে প্রতি ১০টি খাঁচা থেকে প্রতি ছয় মাসে কমপক্ষে এক লাখ ১০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।
সম্ভাবনা পতিত জমিতে (নদী, হাওর, বিল) মাছের উৎপাদন সাধারণ জমিতে স্থাপিত খামারের তুলনায় প্রায় ১৩ গুণ বেশি হয়। সাধারণ পুকুরে বা খামারে এক একরে যে পরিমাণ মাছ চাষ করা যায় সেই পরিমাণ মাছ উৎপাদনের জন্য খাঁচায় মাত্র ১৮০ ঘনমিটার জায়গাই যথেষ্ট। খাঁচায় যেখানে প্রতি হেক্টরে তিন লাখ কেজি মাছ উৎপাদন সম্ভব, সেখানে পুকুরে বা খামারে প্রতি হেক্টরে মাত্র ২৩ হাজার কেজি মাছ উৎপাদন হয়ে থাকে। বর্তমানে দেশের মাছের চাহিদা প্রতি বছরে প্রায় ৩০ লাখ টন। খাঁচায় মাছ চাষ করলে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে মাত্র ১০ হাজার হেক্টর জমিই যথেষ্ট, যা আমাদের দেশের পতিত মোট নদ-নদীর পানির মাত্র শতকরা ০.২৫ ভাগ।
এগ্রোবাংলা ডটকম
সুলভে কৃষি পন্য ক্রয়ে আস্থা রাখুন বাংলাদেশের প্রথম কৃষি ভিত্তিক ইকমার্স ‘এগ্রোবাংলা শপ’ এ।