বনবেগুন

বনবেগুন চাষ

বনবেগুন চাষ : কৃষির নতুন সম্ভবনা

বনবেগুন। মেঠো পথের ধারে, ফসলের মাঠে আগাছা হয়ে, পতিত জমিতে অনাদরে বড় হয়। এখন আর বনবেগুন ফেলনা বা জঞ্জাল নয়। অনেক যত্ন করে গুল্ম এবং কাটা জাতীয় এই গাছের চাষ হচ্ছে সাধারণ বেগুন গাছের সাথে জোড় কলম করে। এমনি জোড় কলম করে অনেক কৃষক তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করছে। দেশের বিভিন্ন কৃষি অফিসগুলোতে কৃষকদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে কিভাবে জোড় কলম তৈরি করতে হবে।

চাষ পদ্ধতি:
বনবেগুন চাষ করতে হলে ১ শতাংশ জমির উপর তৈরি করতে হবে গ্রাফটিং হাউস। বাঁশের ফ্রেমের উপর চট ও পলিথিন দিয়ে তৈরি গ্রাফটিং হাউসে বাইরে থেকে বাতাস ভেতরে আসতে যাতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শুধুমাত্র আলো ও তাপ যাবে। স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে গ্রাফটিং হাইসের তাপমাত্রা একটু বেশি হতে হবে। কারণ সেই তাপমাত্র জোড় কলমের জন্য বিশেষ উপযোগী। গ্রাফটিং হাউসে ৬টি বেড থাকবে, আর প্রতিটি বেডে থাকবে গ্রাফটিং করা ৬শ চারা। ঢাকার জয়দেবপুর থেকে পীত বেগুনের বীজ সংগ্রহ করা যাবে জোড় কলমের জন্য। খোলা আকাশের নিচে বেড তৈরি করে তাতে বীজ ছিটাতে হবে। পীত বেগুনের চারা বয়স ১০ দিন হলে সাধারণ বেগুনের বীজ বপন করতে হবে। একই সাথে পীত বেগুনের চারার বয়স ৪৫ দিন এবং সাধারণ বেগুনের চারার বয়স ৩৫ দিন হলে তা জোড় কলমের উপযোগী হবে। এ সময় পীত বেগুনের চারা গোড়া থেকে ৬/৭ সেন্টিমিটার উপরে ধারালো জিনিস দিয়ে কাটতে হবে। এই কাটা অংশে সাধারণ বেগুনের চারার দুধার কেটে পীত বেগুনের গোড়ার কাটা অংশে প্রবেশ করিয়ে ক্লিপ দিয়ে আটকে রাখতে হবে গ্রাফটিং হাউসে ১০ থেকে ১২ দিন। ওই চারা গ্রাফটিং হাউস থেকে বের করে ছায়াযুক্ত খোলা জায়গায় ৭ দিন রেখে জমিতে রোপণ করতে হবে। রোপণ করার সময় মনে রাখতে হবে জোড়া দেওয়া অংশ কোনভাবেই মাটির নিচে যেন না থাকে।

রোগবালাই:
পীত বেগুনের গাছ ব্যাকটেরিয়া থেকে শুরু করে যে কোন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সাধারণ বেগুন গাছের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। একই সাথে পোকামাকড়ের আক্রমণও হয় না এই চারা গাছে। জমিতে লাগানোর ৫০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যেই ফলন দিতে শুরু করে এবং তা একভাবে ৬ মাসেরও বেশি সময় ফলন দেয়। ফলে সাধারণ বেগুনের চেয়ে উৎপাদন হয় তিনগুণেরও বেশি।

যে কোন মৌসুমে এই বেগুনের চাষ করা যায়।

বনবেগুন গাছের সাথে সাধারণ বেগুন গাছের গ্রাফটিং করা চারার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। বনবেগুন গাছের রোগবালাই নেই বললেই চলে। একই সাথে পোকামাকড়েরর আক্রমণও হয় কম। আমাদের দেশে এই বেগুন চাষের প্রসার ও ফলনের ব্যাপক সম্ভবনা রয়েছে। যেহেতু ভাল ফলন হয় সেহেতু কৃষকরা সহজেই এই ফসল গ্রহণ করে নেবে। চারার দাম একটু বেশি হলেও সমস্যা নেই। জমিতে অন্য ফসলের মত কীটনাশক দিতে হয় না। তাই এক খরচেরই সব হয়ে যায়।

এগ্রোবাংলা ডটকম
সুলভে কৃষি পন্য ক্রয়ে আস্থা রাখুন বাংলাদেশের প্রথম কৃষি ভিত্তিক ইকমার্স ‘এগ্রোবাংলা শপ’ এ।