মরিচের সাথে ভুট্টা চাষ
বাংলাদেশে ভুট্টার উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কৃষি গবষেণা ইনস্টটিউট মরিচের সাথে সাথী ফসল হিসাবে ভুট্টা চাষের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছে।এই প্রযুক্ততিতে দশেরে বহুল ব্যবহূত এবং গুরুত্বর্পূণ ফসল হিসাবে মরিচকে প্রাধান্য দিয়ে এর সঙ্গে কিছু পরিমান ভুট্টার আবাদ করা হয় এমনভাবে যেন মরিচ উৎপাদনে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে।এতে কৃষক তার মরিচ শস্যের সাথে ভুট্টা বোনাস হিসাবে পেয়ে থাকে অপরদিকে বাড়তি ভুট্টার উৎপাদনরে জন্য কৃষককে জমিতে অতিরিক্তি কোনো সার দিতে হয় না।
স্থান নির্বাচন ও চাষের মৌসুম: মরিচ ও ভুট্টা উভয়ের জন্য পানি জমে থাকে না- এমন উঁচু উন্মুক্ত ও আলো বাতাসময় জায়গা নির্বাচন করতে হব। মাটি সাধারণত দো-আঁশ এঁটলে দো-আঁশ, পলি দো-আঁশ কিংবা বেলে দো-আঁশ হলে সবচেয়ে ভাল হয়। সাধারণত মধ্যে কার্তিক থেকে মধ্য পৌষ র্পযন্ত সময়কালে মরিচের চারা রোপণ ও ভুট্টা বীজ বোনার সঠিক সময়। অবশ্য এর পরওে এই ফসলরে চাষ করা যেতে পার। বাংলাদেশে মোট উৎপাদতি মরচিরে শতকরা প্রায় ৯০ ভাগই হয় রবি মৌসুমে।
জাত ও মরিচের চারা তৈরি:
১. মরিচের যেকোন স্থানীয় বানিজ্যিক জাত হলেও চলে। তবে শুকনো মরিচ হিসাবে বিক্রি করা যায় এমন জাতরে মরিচই এই প্রযুক্তির জন্য প্রয়োজন।
২. ভুট্টা: ভুট্টার জাত যমেন- খই ভুট্টা, মোহর, র্বণালী, সাভার-১ সাদাফ ইত্যাদি উলস্নেখযোগ্য।
মরিচের বীজ সরাসরি মাঠে বোনা যায়, আবার বীজতলায় চারা তৈরি করে তা মাঠে রোপণ করা যায়। চারা রোপণ করাই উত্তম। তাতে মাঠে চারা রোপণরে আগ র্পযন্ত সময়টা র্পূববর্তী ফসল উৎপাদনের জন্য পাওয়া যায়। ভুট্টার বীজ সরাসরি বপন করতে হয়।
মরিচ ও ভুট্টার রোপণ: মরিচের চারা রোপণরে জন্য সারি থেকে সারির দূরত্ব ৫০ সেমি (প্রায় ২০ ইঞ্চ) বা সারিতে এক চারা থেকে আরেক চারার দূরত্ব হবে ৩০ সেমি (১২ ইঞ্চি বা ১ ফুট)।
ভুট্টা রোপনের দূরত্ব: প্রতি দুই সারি মরিচের পর পরর্বতী দুই সাররি মাঝখান দিয়ে এক সারি ভুট্টার গাছ থাকব।
সারের পরিমান: মরিচ ও ভুট্টার জন্য সারের পরিমান প্রায় এক। সারের পরমিাণ হল- ইউরয়িা প্রতি হক্টেরে ১৭৫ কেজি, এক একরে ৭০ কেজি এবং প্রতি শতকে ৭০০ গ্রাম। টএিসটি প্রতি হক্টেরে ১৩৫ কেজি, এক একরে ৫০ কেজি এবং প্রতি শতকে ৫৪০ গ্রাম। এমপ/পটাশ প্রতি হক্টেরে ৭৫ কেজি, এক একরে ৩০ কেজি এবং প্রতি শতকে ৩০০ গ্রাম।
পরর্চিযা: চারা রোপণ ও বীজ বপনরে পরে মাটিতে যদি রস না থাকে তাহলে সেচের ব্যবস্থা করতে হব। রোপনের প্রায় এক মাস পরে মাঠে একবার ভালভাবে পানি সেচের পর, ১৫ দনি পর পর দুই বা তনিবার সেচের প্রয়োজন হতে পার।
আগাছা দমন ও মালাচিং: চারা রোপণ ও বীজ বপনের পরর্বতী দেড় মাস আগাছা দমন করা খুবই জরুরী। এ জন্য প্রয়োজনে এক থেকে তিনবার নিড়ানী দেওয়া যেতে পার।
পোকা-মাকড় রোগ বালাই: মরিচের রোগের মধ্যে ডাইব্যাক উল্লেখযোগ্য। এই রোগের শুরুতে শাখার আগা মরে যায়। পরে সেটা নিচের দিকে নামতে থাকে। শেষে গাছ মরে যায়। ফাংগাস বা ছত্রাকজনতি এই রোগে র্বোদো মিকচার বা অন্য কোনো ছত্রাক দমনকারী ওষুধ ছিটাতে হব। এছাড়া সফট রট বা নরম পচা রোগও গাছের ক্ষতি কর। মরিচের বিভিন্নি ক্ষতিকারক পোকার মধ্যে কাটওর্য়াম বা কাটুই পোকা অন্যতম। এটি চারা অবস্থায় গাছ কেটে ফেলে। এর প্রতি কৃষককে কড়া নজর দিতে হব।
ভুট্টা: ভুট্টার রোগ বালাইর মধ্যে লফি ব্র্যাইট বা পাতার মড়ক বা শীষ পচা ও মলিউডি রোগ বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এসব রোগের জন্য আগেই প্রতি সাড়ে ১২ লিটার পানিতে ২ গ্রাম কিউপ্রভিট মিশিয়ে স্প্রে করতে হব। আর ভুট্টার শত্রু মাজরা পোকা উল্লেখযোগ্য। এই পোকা গাছের কচি পাতার ভেতরে প্রবেশ করে খেতে থাকে। উপযুক্ত কীটনাশক ওষুধ ছিটিয়েএই পোকা দমন করা যেতে পারে।
মরিচ ফসল সংগ্রহ: মরিচ কাঁচা পাকা দুভাবেই গাছ থেকে সংগ্রহ করা যেতে পারে। কাঁচা অবস্থায় মরিচ তুলতে হবে যখন তা বতি হবে বা বতি হতে যাচ্ছে এমন অবস্থায়। পাকা মরিচের বেলায় তা তুলতে হবে একটু লালচে র্বণ হয়েছে এমন সময়। সাধারণত মাঠ থেকে হেক্টরপ্রতি মোট ৪ থেকে ৬ টন পাকা মরিচ সংগ্রহ করা হয়। পরে এই মরিচ রোদে শুকিয়ে সংগ্রহ করা হয়।
ভুট্টা সংগ্রহ: ভুট্টাও কাঁচা ও পাকা উভয় অবস্থায় সংগ্রহ করা যায়। সাধারণত কাঁচা অবস্থায় তোলা হয় সিদ্ধ করে বা পুড়িয়ে খাওয়ার জন্য। অথর্নতৈকি দৃষ্টিকোণ থেকে ভুট্টা পাকার পরই ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করা ভাল।
লেখক: কৃষিবিদ বকুল হাসান খান
এগ্রোবাংলা ডটকম
সুলভে কৃষি পন্য ক্রয়ে আস্থা রাখুন বাংলাদেশের প্রথম কৃষি ভিত্তিক ইকমার্স ‘এগ্রোবাংলা শপ’ এ।