থ্রিপস বা চোষী পোকা

ফসলের শত্রু থ্রিপস বা চোষী পোকা

থ্রিপস বা চোষী পোকা দেখতে খুবই ছোট। খালি চোখে দেখা বেশ কঠিন। হালকা বাদামী রঙয়ের খুবই সরু মাকু আকৃতির শরীরের এই পোকাটি বেশ দ্রুত উড়তে পারে। সাধারণত এরা খুবই সক্রিয়। যখন এরা কোনোভাবে আক্রান্ত বা কোনো কারণে স্বাভাবিক অবস্থা বিঘ্নিত হয়ে বিরক্ত বোধ করে তখন নিরাপত্তার জন্য অন্য গাছে বা পাতায় উড়ে যায়। পূর্ণ বয়স্ক পোকা লালচে হলুদ, দু’জোড়া পাখার প্রান্ত লোমশ বা ঝালরের মত। পিঠে দু’টি লম্বালম্বি দাগ আছে। অপ্রাপ্তবয়স্ক পোকা সাদা বা হলুদ। দেখতে পূর্ণাঙ্গ পোকার মতই, তবে পাখাবিহীন। স্ত্রী পোকা পাতার কোষের গভীরে ডিম পাড়ে। ৪ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ডিম ফুটে নিমফ বের হয়। এই নিমফ আবার ৫ দিনের মধ্যে দু’বার খোলস বদলিয়ে পুত্তলি অবস্থায় চলে যায়। মাটিতে পুত্তলি দশা ৪ থেকে ৭ দিনে সম্পূর্ণ হয়। এরপর আবার পাখাযুক্ত পোকা বের হয়ে আসে।

নিমফ ও পূর্ণবয়স্ক পোকা উভয়ই গাছের রস খেয়ে ক্ষতি করে থাকে। এরা পাতার রস শোষন করার জন্য এদের বিশেষ ধরনের মুখোপাঙ্গ দিয়ে পাতার বাইরের আবরণকে ঘষে ঘষে তুলে ফেলে। এতে পাতার খুবই ক্ষতি হয়। পাতা ক্ষত-বিক্ষত হয়। আক্রমণ বেশি হলে পাতার আগার দিক থেকে শুকিয়ে রুপার মত সাদাটে বা ধূসর রঙয়ের হয় ও মুড়িয়ে আসে। শেষে পাতাটি মরে যায়। আক্রান্ত চারা বিকৃত হয়ে নষ্ট হয়ে যায়।

পেঁয়াজ, বেগুন, আলু, টমেটো, মটর জাতীয় সবজি, শিম জাতীয় সবজি, কুমড়া জাতীয় সবজি ও কপি জাতীয় সবজির পাতা থ্রিপস দ্বারা আক্রান্ত হয়। এই সব গাছে বা ক্ষেতে যদি এদের সংখ্যা খুবই বেশি হয় তাহলে সরাসরি পাতা থেকে রস চুষে খাওয়ার ফলে ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয় ও ফলন কমে যায়। থ্রিপস বা চোষী পোকা ভাইরাস রোগের বাহক হিসেবেও কাজ করে। তাই ক্ষেতে এই পোকার আক্রমণ দেখা দিলে বা আক্রমণ ব্যাপক হওয়ার আগেই নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। ১ গ্রাম সাবান গুঁড়া ১ লিটার পানিতে গুলে ওই পানি থ্রিপস আক্রান্ত পাতার ওপরে ও নিচে এবং মাটিতে স্প্রে করলে পোকার সংখ্যা কমিয়ে ফসলের ক্ষতি অনেক কমানো যায়। আক্রমণ বেশি হলে পিরিমিকার্ব জাতীয় কীটনাশক (পিরিমর ৫০ ডিপি) ১ থেকে ১.৫ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করতে হয়।
লেখক: খোন্দকার মোঃ মেসবাহুল ইসলাম

এগ্রোবাংলা ডটকম
সুলভে কৃষি পন্য ক্রয়ে আস্থা রাখুন বাংলাদেশের প্রথম কৃষি ভিত্তিক ইকমার্স ‘এগ্রোবাংলা শপ‘ এ।