কোকোপিট দিয়ে কি হয় আর কি কাজে লাগে
কোকোপিট (cocopeat) সাধারনত বীজ তলা তৈরি, হাইড্রোপনিক্স চাষাবাদ, বাড়ীর ছাদ বাগানে মাটির বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এছাড়া মাটির বিকল্প হিসেবে মাটি তৈরিতে অন্যান্য জৈব উপাদানের সাথে সাথে এই কোকো পিট জৈব উপাদান হিসেবে মিশ্রণ করা হয়ে থাকে।
কোকোপিট কি
শুকনো নারেকেলের আঁশ বা কয়ার (Coir) এর গুঁড়া হলো কোকো পিটের মূল উপাদান। কোকো পিট একটি জৈব উপাদান। এই জৈব উপাদান সম্পূর্ন স্বয়ংক্রিয় আধুনিক মেশিনের মাধ্যমে ইলেকট্রিক চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন সাইজ ও ওজনের ব্লক/পিট আকারে তৈরি করা হয়। তবে কোকোপিট ব্যবহার করার আগে এটিকে পানি দিয়ে ব্লকটিকে আলগা করে ঝুরঝুরে মাটির মত করা হয়। তবে যদি কোকোপিট ব্লক আকারে না থাকে তাহলে সেটি করার প্রয়োজন হয়না।
কোকোপিট কি কাজে লাগে
বাসা বাড়ীর ছাদে বাগান করার জন্য মাটি অনেক ওজন ধারণ করে থাকে এবং কিছু দিন পর দেখা যায় মাটি অনেক বেশী শক্ত হয়ে যায়। অন্যদিকে শহরে বাগান করার জন্য ভালো মানের মাটি সংগ্রহ করা একটি দূর্লভ কাজের মধ্যেই পরে। তাই ছাদ বাগান করার জন্য কোকোপিট খুবই কম ওজন এবং বেশী পরিমাণ জলীয় অংশ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ১০০% জৈব উপাদান। কোকো পিটে প্রাকৃতিকভাবে অপকারী ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাস প্রতিরোধী উপাদান বিদ্যমান থাকে। কোকো পিট হালকা এবং ঝুরঝুরে হবার কারনে এর ভিতরে খুব সহজে উদ্ভিদের জন্য খাদ্য তৈরিতে অক্সিজেন সরবরাহ হয়ে থাকে।
কোকো পিটে প্রাকৃতিক মিনারেল থাকে যা উদ্ভিদের খাদ্য তৈরি এবং উপকারী অণুজীব সক্রিয় করার জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখে। কোকো পিটের পি এইচ এর মাত্রা থাকে ৪.২ থেকে ৬.২ এবং এর ভেতর। ক্ষারত্ব সহনশীল পর্যায় থাকে বলে। নারিকেল থেকে তৈরি জৈব সারে আছে ৬০-৭৫% জৈব পদার্থ, ০.৭৬/ নাইট্রোজেন, ০.৪% হারে ফসফরাস ও পটাশ, ০.২% সালফার ও ০.০০৪ বোরন।
কর্পোরেট ফার্ম গুলোতে বীজ জার্মিনেশন থেকে শুরু করে মাটি ছাড়া চাষাবাদ করার জন্য এই কোকো পিট ব্যবহার করা হয়।ওজনে হালকা হওয়াতে পরিবহণে সহজ তাই এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পরিবহণ এবং ছাঁদে বগান করার জন্য এই কোকো পিট অধিক ব্যবহার হয়।
কোকোপিট ব্যবহারের সুবিধা
-কোকোপিটে দ্রুত পানি ও বাতাস চলাচল করতে পারে ফলে গাছের শিকড় দ্রুত বাড়ে। গাছের শিকড় বাড়ার কারণে গাছও দ্রুত বাড়ে এবং স্বাস্থ্যবান হয়।
-কোকোপিটে দ্রুত পানি ও বাতাস আসা যাওয়ার কারণে ক্ষতিকারক ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করতে পারে না
-কোকোপিটে রাসায়নিক সার না মেশালেও চলে
-শুধুমাত্র ভার্মিকম্পোষ্ট অথবা জৈব সার মিশিয়ে চাষ করা যায় ফলে রাসায়নিক মুক্ত সবজি, ফল, ফুল, অর্কিড ও অন্যান্য গাছ উৎপাদন করতে পারবেন
-কোকোপিটে আছে পানি ধরে রাখার অসাধারণ ক্ষমতা। ১ কেজি কোকোপিট ১৫ কেজির মতো পানি ধরে রাখতে পারে। বিভিন্ন ঋতুতে এর পরিমাণ বিভিন্ন হয়ে থাকে। একবার কোকোপিট ব্যবহার করলে পানি দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা করার প্রয়োজন পড়বে না
-কোকোপিটের আর্দ্রতা ধরে রাখার ক্ষমতা ৬০০-৮০০ ভাগ। গাছের জন্য যতটুকু পানি দরকার ঠিক ততটুকু পানি এই কোকোপিট ধারন করে রাখে ফলে গাছের শিকড়ে পঁচন ধরে না
-কোকোপিটে প্রাকৃতিক মিনারেল থাকে যা উদ্ভিদের খাদ্য তৈরি এবং উপকারী অণুজীব সক্রিয় করার জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখে। কোকোপিট দিয়ে গাছ লাগালে ক্ষতিকারক পোকা মাকড় আসে না
-টবে মাটি ব্যবহার করলে ওজন বেশি হয়, কিন্তু কোকোপিট ব্যবহার করলে কম হয়। ছাদের উপর অতিরিক্ত চাপও পড়েনা।
-হাইড্রোপনিক উদ্ভিদ কোকোপিটে মাটির চেয়ে ৫০ ভাগ দ্রুত বাড়তে পারে
-কোকো পিট মাটির তুলনায় পরিষ্কার ও পরিছন্ন ফলে যেখানে গাছ রাখবেন সেই যায়গা গুলো যেমন আপনার ঘর, বারান্দা ও ছাদ নোংরা হবে না সর্বসময় পরিষ্কার ও পরিছন্ন থাকবে
✓ কোকোপিট ব্লক কিনতে এখানে ক্লিক করুন।
এগ্রোবাংলা ডটকম