চিনাবাদামের ক্ষতিকারক পোকা দমনের ব্যবস্থা
তেলজাতীয় ফসলের মধ্যে চিনাবাদাম একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল। এর বীজে রয়েছে শতকরা ৪৮-৫২ ভাগ তেল। চিনাবাদামে আছে আমিষ ও চর্বি যা আমাদের দেহ গঠনের জন্য খুবই প্রয়োজন এবং এর পরিমাণ গরুর দুধের চেয়ে যথাক্রমে ২ ও ১৪ গুণ বেশি। এছাড়াও পুষ্টিকর গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এ গাছের পাতা, কাণ্ড ইত্যাদি। এই ফসল বিভিন্ন ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গ দ্বারা আক্রান্ত হয় ফলে কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া যায় না।
চিনাবাদামের ক্ষতিকর কীটপতঙ্গের মধ্যে সাধারণত উইপোকা, জ্যাসিড, বিছাপোকা, সাধারণ কাটুই পোকা, থ্রিপস ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
উইপোকা : উইপোকা দলবদ্ধভাবে গাছের শিকড় আক্রমণ করে। এরা শিকড় ও কাণ্ডের ভেতর গর্ত করে ভেতরের নরম অংশ খায়, ফলে গাছ মারা যায়। উইপোকা পডের ভেতর ছিদ্র করে ও তাতে বীজ নষ্ট হয়ে যায় এবং ভেতরে অনেক সময় ছাইয়ের মতো হয়। অনেক সময় তারা পডের ওপর নরম টিস্যু খেয়ে ফেলে, এজন্য বাদামের পডকে জালিকা আকার দেখা যায়।
দমন ব্যবস্থা :
১. প্রতি কেজি বীজের সঙ্গে ১ চা-চামচ কেরোসিন বা নিম তেল ভালোভাবে মিশিয়ে বপন করলে উইপোকার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
২. উইপোকার বাসা নষ্ট করে এ পোকা দমন করা যায়।
৩. আক্রান্ত জমিতে পানির সঙ্গে কেরোসিন মিশিয়ে সেচ দিলে। পাইরিফস ৫০ ইসি ২ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ১৫ দিন পরপর স্প্রে করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
৪. আক্রমণ খুব বেশি হলে ফুরাডান ৫জি প্রতি হেক্টরে ১৮ কেজি হিসেবে প্রয়োগ করলে এ পোকা দমন করা যায়।
বিছা পোকা : বাদাম ফসলে বিছা পোকা মারাত্মক ক্ষতিসাধন করে থাকে। বিছা পোকার স্ত্রী মথ দেখতে হালকা হলদে বাদামি রংয়ের এবং তাদের পাখায় কালো ফোঁটা থাকে। এদের লার্ভা বা কীড়া হালকা হলুদ বর্ণের এবং প্রায় ১-১.৫ ইঞ্চি লম্বা হয়ে থাকে। মাথার সামান্য অংশ কালো থাকে। স্ত্রী মথ সাধারণত পাতার নিচের দিকে ডিম পাড়ে এবং ডিম থেকে কীড়া বের হয়ে কীড়াগুলো পাতা খেয়ে জালিকা সৃষ্টি করে। এরা শুধু পাতাই খায় না বরং কাণ্ড ও ফুল খেয়ে মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে।
দমন ব্যবস্থা :
১. মথ আলোর দিকে আকৃষ্ট হয়; তাই আলোর ফাঁদ ব্যবহার করে এ পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
২. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ পদ্ধতি অবলম্বন করলে এ পোকা থেকে সহজেই রেহাই পাওয়া যায়।
৩. হাত দ্বারা এ পোকা ধ্বংস করা যায়। ক্ষেতের মাঝে মাঝে খুঁটি পুঁতে দিলে পাখি কীড়াগুলো ধরে খায়।
৪. নিমের রস ১৫ ভাগ স্প্রে করলেও এ পোকা দমন করা যায়। ৫. প্রচণ্ড আক্রমণের সময় সিমবুশ ১০ ইসি, পারফেকথিয়ন ৪০ ইসি, ২ মিলি ১ লিটার পানির সঙ্গে মিশিয়ে ১০ দিন অন্তর ২ বার স্প্রে করা যায়।
এগ্রোবাংলা ডটকম
সুলভে কৃষি পন্য ক্রয়ে আস্থা রাখুন বাংলাদেশের প্রথম কৃষি ভিত্তিক ইকমার্স ‘এগ্রোবাংলা শপ’ এ।