ধুন্দুল চাষ

ধুন্দুল চাষ

ধুন্দুল চাষে জমির প্রথম শর্ত হচ্ছে উঁচু, পানি জমে থাকে না, গাছের কোনো ছায়া থাকে না এমন জমি নির্বাচন করতে হবে। দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ ধুন্দুল চাষের জন্য উত্তম । মাটি উর্বর এবং সেচ ও নিষ্কাশন সুবিধাযুক্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়।

বীজের পরিমাণ : প্রতি হেক্টরে ১.৫- ২.০ কেজি হিসাবে বীজ প্রয়োজন হয়।

জমি তৈরি : ৩- ৪ বার গভীর চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে। আগাছামুক্ত ঝুরঝুরা করে নিতে হবে। চাষের সময় জমিতে সার প্রয়োগ করা যেতে পারে। এরপর ১ ফুট গভীর ও ১.৫ ফুট চওড়া করে মাদা বা ঝাড় করতে হবে। এক মাদা থেকে অপর মাদার দূরত্ব হবে ৫-৬ ফুট। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে, জমির চেয়ে মাদা যেন কমপক্ষে ৫-৬ ইঞ্চি উঁচু হয়। ওপরে উল্লেখিত পরিমাণ অনুসারে সার জমিতে প্রয়োগ না করে মাদায়ও প্রয়োগ করতে পারেন সে ক্ষেত্রে প্রতি মাদায় পচা গোবর, ছাই, পচা কচুরিপানা, জৈব সার ইত্যাদি মিলিয়ে ৫-৬ কেজি, ১০০ গ্রাম টিএসপি, ৬০-৭০ গ্রাম এমপি সার প্রয়োগ করে মাটিতে ভালোমতো মিশিয়ে দিতে হবে। এবং ৫-৬ দিন অপেক্ষা করে বীজ বপন করতে হবে।

বীজ বপন : ভালো জাতের বীজ নির্বাচন করতে হবে। বীজ বপনের ২৪ ঘণ্টা আগে ভিজিয়ে রাখতে হবে। প্রতি মাদায় ৪-৫ টি বীজ পুঁতে দিতে হবে।

সেচ : মাটিতে রস কম থাকলেই সেচ দেয়া প্রয়োজন। তবে ইউরিয়া উপরি প্রয়োগের পর সেচ দেয়া উত্তম।

অন্যান্য পরিচর্যা : প্রতি মাদায় ৩-৪টি গাছ রেখে বাকিগুলো তুলে ফেলতে হবে। পানি নিষ্কাশনের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাঁশের খুঁটি দিতে হবে। মাচায় বা জাংলায় যাতে সহজে উঠতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আগাছা জন্মালে পরিষ্কার করে দিতে হবে। ১৫-২০ দিন পর পর প্রতি মাদায় ৫০ গ্রাম হারে ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করতে হবে।

রোগ-বালাই দমন : ধুন্দুল ক্ষেত সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। রোগাক্রান্ত ও মরা পাতা পুঁতে ফেলতে হবে। ফল ছিদ্রকারী পোকা ফসলের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে। এ রোগের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

সংগ্রহ ও ফলন : রোপণের পর ৫০-৬০ দিনের মধ্যে ধুন্দুল সংগ্রহ করা যাবে। ফল বাতি হলে বোঁটা কেটে সংগ্রহ করতে হবে। এক হেক্টরে ১২-১৪ মেট্রিক টন পর্যন্ত ফলন হয়ে থাকে। রোগমুক্ত, উন্নত জাতের বীজ, আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি ও সঠিক নিয়ম অনুযায়ী চাষ করুন। যে কোনো পরামর্শের জন্য আপনার এলাকায় নিয়োজিত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, কাছের কৃষি পরামর্শ কেন্দ্র অথবা উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করুন।
এগ্রোবাংলা ডটকম

হাইব্রিড ধুন্দুল ফুজিয়ান এর চাষ পদ্ধতি

হাইব্রিড ধুন্দুল ফুজিয়ান সবজিটি বর্ষা মৌসুমে চাষ করতে হয়। এ সবজি হাল্কা সবুজ, আঁশবিহীন, খেতে মোলায়েম ও অত্যন্ত সুস্বাদু। চারা লাগানোর ৪০-৪৫ দিনের মধ্যে ফসল সংগ্রহ শুরু করা যায়। ফল ২৫-৩০ সেমি লম্বা এবং গড় ওজন ১২৫ গ্রাম। প্রতি গাছে ৩৫-৪০টি ফল পাওয়া যায়। একরপ্রতি ফলন ১২-১৪ টন। পোকা-মাকড়, রোগ ও বৃষ্টির পানি সহনশীল।

হাইব্রিড ধুন্দুল ফুজিয়ানের চাষ নির্দেশিকা

জমি নির্বাচন : উর্বর এটেল দো-আঁশ মাটি ধুন্দুল চাষাবাদের জন্য উপযোগী। বীজ বপনের সময় : ফেব্রুয়ারি-আগস্ট মাস বীজ বপনের সময়। বীজের পরিমাণ : প্রতি শতাংশে ৪ গ্রাম এবং একরপ্রতি ৪০০ গ্রাম।

বীজ বপন পদ্ধতি : সারি থেকে সারির দূরত্ব ২ মিটার এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ১ মিটার। ১৫৫ সেমি. প্রশ্বস্ত বেডের উভয় পাশে ৩০ সেমি. (১ ফুট) জায়গা রেখে একটি সারিতে ১ মিটার (৪০ ইঞ্চি) দূরে দূরে বীজ বপন করতে হবে। সেচ ও নিষ্কাশনের সুবিধার্থে দুই বেডের মাঝে ৪৫ সেমি. (১৮ ইঞ্চি) চওড়া ও ১৫ সেমি. (৬ ইঞ্চি) গভীর নালা রাখা আবশ্যক।

ফসল সংগ্রহ ও ফলন বীজ বপনের ৪০-৪৫ দিনের মধ্যে ফসল সংগ্রহ শুরু করা যায়। প্রতি শতকে ফলন ১২০-১৪০ কেজি এবং একরপ্রতি ফলন ১২-১৪ টন।

আবশ্যকীয় কার্যাবলী জমি আগাছা মুক্ত রাখতে হবে। প্রয়োজনে সেচ ও নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিতে হবে। গাছ লতানোর জন্য মাচার ব্যবস্থা করতে হবে। রোগবালাই দমনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।

এগ্রোবাংলা ডটকম
সুলভে কৃষি পন্য ক্রয়ে আস্থা রাখুন বাংলাদেশের প্রথম কৃষি ভিত্তিক ইকমার্স ‘এগ্রোবাংলা শপ’ এ।